ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোকে আত্মরক্ষার প্রস্তুতি বাড়াতে বললো যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ শনিবার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মিত্রদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক চাপে তাদের একা ফেলে রাখা হবে না। তবে তিনি এই দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিরক্ষায় আরও বেশি অবদান রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন।
সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ‘শাংরি-লা ডায়ালগ’ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হেগসেথ বলেন, চীন এখন আর শুধু তাইওয়ান দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে না, বরং ‘প্রতিদিনই তারা সেই অনুশীলন করছে।’ তার ভাষায়, চীনা সেনাবাহিনী আসল যুদ্ধের মহড়া দিচ্ছে। আমরা রাখঢাক করে বলছি না—এই হুমকি বাস্তব এবং তা শিগগিরই কার্যকর হতে পারে।
আরও পড়ুন>>
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও তুলা ও জ্বালানি কিনতে চায় বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হলে বিনামূল্যে ‘গোল্ডেন ডোম’ সুরক্ষা পাবে কানাডা
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ লাখের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে বহিষ্কারের শঙ্কা
চীন যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এসব মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘উসকানিমূলক’ বলে দাবি করেছে, তবে হেগসেথ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, বেইজিং কেবল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নয়, লাতিন আমেরিকায়ও, বিশেষ করে পানামা খালে প্রভাব বিস্তারেরও চেষ্টা করছে।
সম্পদের টানাপোড়েনে প্রশ্ন
সম্মেলনে হেগসেথের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, যদি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার হয়, তাহলে কেন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে সামরিক সম্পদ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে? জবাবে তিনি বলেন, ইয়েমেন থেকে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে এবং যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতেই এই সম্পদ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় মিত্রদের ভূমিকার ওপর জোর
হেগসেথ বলেন, আমরা একা যেতে চাই না। আমাদের সবচেয়ে বড় কৌশলগত সুবিধা হলো আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের নেটওয়ার্ক। কিন্তু সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিনিয়োগ করে সেই সক্ষমতা গড়ে তুলতে হবে।
তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোকে ইউরোপীয় দেশগুলোর মতো তাদের জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের আহ্বান জানান।
চীনের প্রতিক্রিয়া
চীন এ বছর তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সম্মেলনে পাঠায়নি, যা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার প্রতিবাদ বলেই মনে করা হচ্ছে। চীনের প্রতিনিধি রিয়ার অ্যাডমিরাল হু গাংফেং হেগসেথের মন্তব্যকে ‘তথ্যবিকৃত ও উসকানিমূলক’ বলে বর্ণনা করেন।
সম্মেলনে স্পষ্ট বার্তা
হেগসেথ বলেন, আমরা এখানে আছি। আর কেউ কেউ নেই। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ঐতিহ্যগত ও অঐতিহ্যগত মিত্র—সব দেশকে নিয়ে এক জোটে কাজ করতে। তবে এ জোটে যোগ দিতে দেশগুলোকে পশ্চিমা সংস্কৃতি বা জলবায়ু বিষয়ে একমত হতে হবে না।
সূত্র: এপি/ইউএনবিকেএএ/