নার্সারিতে সফল প্রবাস ফেরত সেলিম

ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সৌদি আরবে পাড়ি জমান চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার সেলিম উদ্দিন। সেখানে তেমন কিছু করতে না পেরে পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেখানে যাওয়ার ৬ মাস পর শরীরে বাসা বাঁধে জন্ডিস। দেশে ফেরত এসে দীর্ঘসময় অসুস্থ ছিলেন।
চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে অর্জিত সঞ্চয় ব্যয় হয়ে যায়। একেবারে শূন্য হয়ে পড়েন সেলিম। চোখে ঘোর অন্ধকার দেখেন। ঠিক তখন ধার করা ৩ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে একেবারে ছোট্ট পরিসরে নার্সারি শুরু করেন। এখন ব্যবসার পরিধি বেড়েছে, হয়েছেন স্বাবলম্বী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেলিম উদ্দিন মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম পোলমোগরা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। তিনি বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারার নার্সারি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ৩ হাজার টাকা ধার নিয়ে চারা কিনে ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়তে থাকে। প্রবাসে মাসে যা আয় করেছেন, তার চেয়ে এখন অনেক ভালো আয় করছেন। নার্সারি ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে সুখেই আছেন। দেশে থেকেও কঠোর পরিশ্রম করে স্বাবলম্বী হওয়া যায় বলে প্রমাণ করছেন সেলিম।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘৬ বছর সৌদি আরব, ৬ মাস দুবাই চাকরি করে জন্ডিসের কারণে দেশে এসে ৮ বছর মৃত্যর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছি। ধার করে টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের নার্সারি করি। বছরে ৪-৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি করি।’
আরও পড়ুনপাহাড়ে অ্যাভোকাডো চাষে সফল ওমর শরীফকরলা চাষে কম খরচে বেশি লাভ
তিনি বলেন, ‘নার্সারিতে পেয়ারা, চায়না কমলা, নাগপুরি কমলা, ড্রাগন, হাড়িভাঙা আম, কেরালা নারিকেল, ভিয়েতনামি নারিকেল, চায়না থ্রি লিচু, সিডলেস লেবু, দার্জিলিং কমলা, বারোমাসি কাটিমন আম, আতা, আম্রপালি, হিমসাগরসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা পাওয়া যায়। সিজনে ৮-১০ জন কর্মচারী কাজ করেন। নার্সারিতে সারাবছর ২ জন কর্মচারী কাজ করেন।’
সেলিম বলেন, ‘ছেলের নামে নামকরণ করেছি ‘সোহাগ নার্সারি’। চারা আশপাশের ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন, মায়ানী, মঘাদিয়া, সাহেরখালীসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। সরাসরি ও অনলাইনেও বিক্রি করা যায়। বিদেশের চেয়ে বেশি আয় করছি। ছেলেমেয়ের লেখাপড়াসহ সংসার চলছে। জমি কিনে নার্সারি বড় করার চেষ্টা করছি।’
বড়তাকিয়া এলাকার ছগির হোসেন বলেন, ‘সেলিম প্রবাস থেকে এসে অনেক অসুস্থ ছিলেন। সুস্থ হয়ে ছোট পরিসরে নার্সারি শুরু করে এখন মোটামুটি স্বাবলম্বী।’
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মিরসরাইয়ে নার্সারি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সেলিমও তাদের একজন। দেশে এসে অনেক পরিশ্রম করেছেন। তার নার্সারিতে যাওয়া হয়নি। একদিন পরিদর্শন করে আসবো।’
এসইউ/জেআইএম