বন্যার্তদের চাল আত্মসাৎ করে বরখাস্ত হলেন ইউপি চেয়ারম্যান

সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনজু মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে বিষয়টি মোবাইলে নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস।
এর আগে ২০ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদ এলাহী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে (চেয়ারম্যানকে) সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জারি করা হয়।
বরখাস্ত হওয়া মো. মনজু মিয়া উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
এর আগে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর এই চেয়ারম্যানকে বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ত্রাণের চাল বিতরণ না করে গোডাউনে মজুত রাখার ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় উপজেলা প্রশাসন। একই দিন উদ্ধার হওয়া চাল স্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করা হয়। পরে নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া চেয়ারম্যানের জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসন।
সেই নোটিশে বলা হয়, ১৬ জুলাই সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ত্রাণ শাখা থেকে কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৩ টন চাল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়ার অনুকূলে বরাদ্দ হয়। সেই চাল উত্তোলন করে বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ না করে তার নিজস্ব গুদামে রাখেন, যা আইন পরিপন্থি।
‘বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত জিআর চাল যথাসময়ে বিতরণ না করার কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার জবাব আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করার জন্য বলা হলো।’
চেয়ারম্যানের জবাব ও প্রশাসনিক তদন্ত শেষে পরবর্তীতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে স্থানীয় সরকার বিভাগের (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী এক প্রজ্ঞাপনে মো. মনজু মিয়াকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যানের কার্যক্রম জনস্বার্থ এবং ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ববোধের পরিপন্থি হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে চাল উত্তোলন করেন কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া। পরিষদে চালগুলো না রেখে কছিম বাজারের মো. জাহাঙ্গীর আলমের গোডাউনে রাখেন তিনি। বেশ কিছুদিন পরও চালগুলো বিতরণ করেননি চেয়ারম্যান।
এ এইচ শামীম/জেডএইচ/ read more

এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনসের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনসের (আনফ্রেল) সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতারা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে ‘আগে মৌলিক সংস্কার, পরে নির্বাচন’, এই অবস্থানটি তুলে ধরা হয়।
এসময় আনফ্রেল তাদের চলমান কার্যক্রম তুলে ধরে জানায়, বাংলাদেশে তারা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নির্বাচনী স্বচ্ছতা জোরদার করার লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডার ম্যাপিং ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এনসিপির পক্ষে সভায় অংশ নেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং মাহবুব আলম।
আনফ্রেলের পক্ষে ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোসালেস, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্দু আবেরাথনা, প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট মে বুথয় এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমে।
এনএস/জেডএইচ/ read more

ঢাকায় ইইউভুক্ত দেশগুলোর ভিসা সেন্টার খোলার অনুরোধ

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) যেসব দেশের ভিসা ঢাকা থেকে ইস্যু করা হয় না, ইইউ রাষ্ট্রদূতকে সেসব দেশের জন্য ঢাকায় একটি ভিসা সেন্টার খোলার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ইস্যু, অভিবাসন, মানবপাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধ, বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ইইউভুক্ত দেশসমূহে বাংলাদেশ অন্যতম জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন, চিকিৎসাসহ নানা কাজে প্রচুর বাংলাদেশি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন। বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা বিবেচনায় পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে গিয়ে ইইউভুক্ত দেশের জন্য ভিসা সংগ্রহ সময়সাপেক্ষ, কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। তাই ইইউভুক্ত দেশগুলোর ঢাকায় একটি ভিসা সেন্টার খোলা অত্যাবশ্যক।
এ বিষয়ে ইইউভুক্ত দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়াকে ইইউ সমর্থন করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ চাইলে ইইউ প্রয়োজনীয় দক্ষতা, সামর্থ্য, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা দিয়ে এ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে পারে।
বাংলাদেশে এ বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবলের ঘাটতি রয়েছে বিধায় উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের জন্য ইইউভুক্ত দেশে এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের অনুরোধ জানান।
এসময় উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের আন্তরিকতা ও ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হলে এটি ফলপ্রসূ হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। তবে ধীরে ধীরে এটির উন্নতি ঘটছে।
এসময় রাষ্ট্রদূত বলেন, ইইউ বাংলাদেশের নিরাপত্তা সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
রাষ্ট্রদূত সংঘবদ্ধ মবসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক অপরাধ পরিসংখ্যান সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, অফিসিয়ালি বাংলাদেশে ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর চেয়েও বেশি শরণার্থী কক্সবাজারে বসবাস করছেন। যা ওই অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য হুমকিস্বরূপ।
মানবপাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধে ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবছর প্রচুর বাংলাদেশি ইউরোপে অভিবাসনের উদ্দেশ্যে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়। দালাল ও মানবপাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেকের প্রাণহানি ঘটে।
তিনি বলেন, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ, লিবিয়া ও ইইউ এর মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় ডায়ালগ আয়োজন ও পরবর্তীতে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে।
উপদেষ্টা এ বিষয়ে ইইউকে নেতৃত্ব প্রদান ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন।
এসআরএস/জেডএইচ/ read more

Need Help?